চুলের যত্নে ভিটামিন এ এর উপকারিতা।
রেগুলার খাদ্য তালিকায় ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। আমাদের দেহের চুল, নখ, ত্বক এবং স্বাস্থ্যের পুষ্টি যোগাতে ভিটামিন অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে এর প্রভাবে আমাদের ত্বক মলিন হয়ে যায়, চুলের গোড়া নরম হয়ে যায়, চুলের আগা ফেটে যায়, চুল ড্যামেজ হয়ে যায় এবং অতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যা দেখা যায়। এই সমস্যা গুলোর সমাধান করতে খাবার তালিকায় ভিটামিনযুক্ত খাবার যোগ করুন।
চুল,ত্বক, নখের যথাযথ পুষ্টি যোগাতে ভিটামিন অপরিহার্য। আমরা অনেকেই জানি না কোন ভিটামিন দেহে কি ভূমিকা পালন করে ?
চুল ভালো রাখার জন্য রেগুলার বেসিক যত্নের পাশাপাশি ‘ভিটামিন এ’ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। কারণ ‘ভিটামিন এ’ সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণে চুল এবং ত্বক উভয়েই ভালো বেনিফিট পাওয়া যায়। আজকে আমরা জানবো ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণে চুল এবং ত্বকে কি কি বেনিফিট পাওয়া যায়।
ত্বক এবং চুল ভালো রাখতে পুষ্টিবিদদের সবসময় ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার খাদ্য তালিকায় রাখতে বলেন।
ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার খেলে চুলে কি কি উপকার হয়-
১. চুল মজবুত হয়।
২. চুল সহজে ভেঙে যায় না।
৩. মাথার স্ক্যাল্প ও চুলকে সুরক্ষিত রাখে।
৪. চুল পড়া কমায়।
৫. কোষের সুস্বাস্থ্য উন্নত করে।
৬. বাইরের দূষণ এবং সূর্যের অতিবেগুনি রশ্নি হতে চুলকে রক্ষা করে।
৭. চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
৮. এটি চুলের ত্বকে সিবাম তৈরি করে, ফলে চুলের ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং চুল মজবুত থাকে।
৯. মাথার স্কেল্প ময়শ্চারাইজড রাখে।
১০. ভিটামিন এ মাথার স্কেল্পের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে।
কোন খাবারে ‘ভিটামিন এ’ পাবেন –
গাজর- গাজর হচ্ছে ‘ভিটামিন এ’ এর খুব ভালো উৎস। এক কাপ গাজর আপনার রেগুলার ভিটামিন এ এর গড় চাহিদার ৩৩৪ শতাংশ পূরণ করতে পারে।তাই দৈনিক খাদ্য তালিকায় গাজর রাখবেন।
মিষ্টি আলু- মিষ্টি আলু আমাদের চুল এবং ত্বক উভয়ের জন্যই খুবই উপকারী। শুধু একটি মিষ্টি আলু মানুষের দৈনন্দিন ভিটামিন এ এর চাহিদার গড় ৪৩৮ শতাংশ পূরণ করতে সক্ষম।তাই চেষ্টা করবেন নিয়মিত খাদ্য তালিকায় মিষ্টি আলু রাখতে।
ডিম- ডিমে রয়েছে অফুরন্ত ভিটামিন। শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সুষম খাদ্যের বন্টন একটি ডিমেই পাওয়া যায়।
মাখন- মাখনে রয়েছে ভিটামিন এ। তাই পরিমাণ মতো মাখন খেতে পারেন রেগুলার ডায়েটে। তবে খুব বেশি পরিমাণে নয় এটা শরীরে চর্বির পরিমাণ বাড়াতে পারে।
স্যামন ফিস- স্যামন ফিসে রয়েছে ভিটামিন এ এবং ওমেগা থ্রি এর ভান্ডার। শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণের জন্য জন্য খুবই উপকারী এই মাছ।
কলিজা – কলিজায় আয়রনের পাশাপাশি রয়েছে প্রচুর ভিটামিন এ । তাই খাবার তালিকায় কলিজা রাখার চেষ্টা করুন।
মিষ্টি কুমড়া – মিষ্টি কুমড়া তে রয়েছে ভিটামিন এ। রেগুলার খাদ্য তালিকায় ১০০ গ্রাম কুমড়া রাখবেন কারণ এটি আপনার শরীরের ভিটামিনের চাহিদার ১৭০ শতাংশ পূরণ করবে।
লাল মরিচ- লাল মরিচে রয়েছে কারোটেনয়েডস, এন্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ। মানুষের ‘ভিটামিন এ’ এর রেগুলার খাদ্যের গড় চাহিদার ৪২ শতাংশ পূরণ করে লালমরিচ।
দুগ্ধ জাতীয় খাবার- দৈনিক এক কাপ দুধে রয়েছে ১০ – ১৪ শতাংশ ভিটামিন এ। দুগ্ধ জাতীয় খাবার যেমন-পনির ,মাখনে ও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ।
আম- একটি আমে রয়েছে ১১২ মাইক্রগ্রাম ভিটামিন এ। এছাড়াও এতে রয়েছে ডায়েটরি ফাইবারের প্রাচুর্য। তাই সিজনাল এই ফলটি খাবেন মন ভরে।
এছাড়াও পাকা পেঁপে, টমেটো, পালং শাক, ব্রকলি,সবুজ শাকসবজি, রঙিন ফলমূল, কড লিভার অয়েল, মসুর ডাল , স্পিনাচ,হ্যলি বাট মাছের যকৃৎ, যে কোন প্রকারের মাছ ,মাছের তেল ইত্যাদি খাবারে ভিটামিন এ পাওয়া যায়।
ভিটামিন এ চুলের জন্য খুবই উপকারী। কারণ ভিটামিন এ মাথার ত্বকের ডিহাইড্রেশন রোধ করে, সিবামের নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করে চুল পড়া রোধে অবদান রাখে।
ভিটামিন এ এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে, ফলে চুলে পুষ্টির যোগান পায় এবং চুল পড়া রোধ হয়।
ভিটামিন এ এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য ফ্রী রেডিকেলের প্রভাবের বিরুদ্ধে লড়াই করে। ফলে সেলুলার অবক্ষয় এবং বার্ধক্য বিষয়ক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয় । এতে চুলের গঠন মজবুত হয় এবং চুল পড়া কমে।
সঠিক পরিমাণে ‘ভিটামিন এ ‘গ্রহণ করলে চুলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান হয়। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত। কারণ পরিমাণে বেশি’ ভিটামিন এ ‘ গ্রহণ করলে শরীরের জন্য মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে, এতে সমস্যা আরো বাড়তে পারে।