ত্বকের যত্নে আলুর উপকারিতা।
রেগুলার খাবার ডায়েটে আলু খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সবজি। আলু দিয়ে নিত্যনতুন বিভিন্ন খাবারের আইটেম বানানো যায়। এই সবজিটি প্রায় সকল তরকারির সাথেই মানিয়ে যায়। আলু কেবল স্বাস্থ্যের জন্য ভালো এমনটা নয়,এটি রূপচর্চায় ও বহুল ব্যবহৃত হয়। আলুতে রয়েছে ভিটামিন C, ভিটামিন B6, পটাশিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ,এনজাইম ও ফসফরাসের মতো উপাদান যা ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষায় খুবই কার্যকর। চোখের নিচে পড়া ডার্ক সার্কেল, ব্রণ, ব্রনের দাগ,সান ট্যান, কালো বা ছোপ ছোপ দাগ, রিঙ্কেলস ও ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এটি খুবই কার্যকর একটি প্রাকৃতিক উপাদান।
যারা ত্বকের যত্নে প্রাকৃতিক উপাদান বেশি পছন্দ করেন তারা,আলু দিয়ে বিভিন্ন ফেসপ্যাক তৈরি করে ব্যবহার করুন। এটি প্রাকৃতিক উপাদান হওয়ায় ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি করে না। চলুন , আজকের ফিচারে ত্বকের যত্নে আলুর উপকারিতা ও ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
আলুর উপকারিতা:
ত্বকের যত্নে আলু খুবই কার্যকর একটি প্রাকৃতিক উপাদান। তাইতো, চীনা ও জাপানিজরা আলুর রস দিয়ে বিভিন্ন ফেসপ্যাক তৈরি করে ব্যবহার করে। চলুন জেনে নেই ত্বকের যত্নে আলু ব্যবহার করলে কি কি উপকার পাওয়া যায়।
১. ডার্ক সার্কেল ও আই পাফিনেস দূর করে-
চোখের নিচে আলুর রস বা আলুর স্লাইস ব্যবহার করলে চোখের নিচে পড়া কালো দাগ ও আই পাফিনেস দূর হয়। এক্ষেত্রে একটি কাঁচা আলু কেটে পাতলা স্লাইস করে চোখের ওপর ১০-১৫ মিনিট রেখে সরিয়ে ফেলুন।
২. ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়-
আলু যে রয়েছে ভিটামিন সি ও ভিটামিন B6 যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে খুবই কার্যকর। সপ্তাহে দুই বার আলুর এই ফেসপ্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন, এক্ষেত্রে এক চামচ আলুর রস ও এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এই ফেসপ্যাকটি নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক হবে উজ্জ্বল ও দাগমুক্ত।
৩. ব্রণের দাগ ও কালো দাগ ছোপ দূর করে-
ত্বকের দাগ কমাতে আলুর রস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে একটি কটন প্যাড বা তুলার সাহায্যে ছেচানো আলুর রস মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বকের দাগ হালকা হবে এবং ত্বক হবে পরিষ্কার।
৪. সানবার্ন ও সান ট্যান দূর করে-
কাঁচা আলুর পেস্ট বা রস পোড়া অংশে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের জ্বালাভাব কমায় এবং ত্বকে আনে ঠান্ডা অনুভূতি ।
৫. ত্বকের রিংকেলস দূর করে ও টানটানভাব বজায় রাখে –
আলুর রস ও ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে মুখে লগান,১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের রিংকেলস দূর করবে ও ত্বককে রাখবে টানটান।
আলুতে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন B6 , পটশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস এবং জিঙ্ক যা ত্বকে প্রাকৃতিক ব্লিচিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে।
আলুর ফেসপ্যাক
চলুন আলুর কিছু উপকারী ফেসপ্যাক তৈরি করার পদ্ধতি জেনে নেই।
আলু ,টক দই ও গোলাপজলের ফেসপ্যাক
একটি পাত্রে ১ টেবিল চামচ আলুর রস,১ টেবিল চামচ টক দই ও ১ চা চামচ গোলাপজল মিশিয়ে পুরো মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এটা ব্যবহারে ত্বকের পিগমেন্টেশন রিমুভ হয় ও ত্বক হয় নরম।
আলু, শশা ও অ্যালোভেরার ফেসপ্যাক
একটি বাটিতে ১ চা চামচ আলুর রস,১ চা চামচ শশার রস ও ১ চা চামচ অ্যালোভেরা জেল নিয়ে নেড়েচেরে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এবার মিশ্রণটি চোখের নিচে সহ পুরো ফেইসে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন। এই ফেসপ্যাকটি ব্যবহারে ত্বকে হাইড্রেশন প্রোভাইড হয়, সান ট্যান দূর হয় ও স্কিন থাকে সতেজ।
আলু ও মধুর ফেসপ্যাক
এই ফেসপ্যাকটি বানানো খুবই সহজ। এটা তৈরি করতে আমাদের লাগবে ২ টেবিল চামচ আলুর রস ও ১ চা চামচ মধু। এবার আলুর রস ও মধু একত্রে মিশিয়ে পুরো মুখে লাগিয়ে, ১৫-২০ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বককে নরম করে, উজ্জ্বলতা বাড়ায় ও ব্রণের দাগ হালকা করে।
আলু , বেসন ও দুধের ফেসপ্যাক
এই ফেসপ্যাকটি ত্বকে একটা ইনস্ট্যান্ট গ্লো নিয়ে আসে। এই ফেসপ্যাকটি তৈরি করতে আমাদের লাগবে ১ টেবিল চামচ আলুর রস,১ টেবিল চামচ বেসন ও ১ চা চামচ কাঁচা দুধ। এবার এই সব গুলো উপকরণ একত্রে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এবার এটি পুরো মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটা ত্বকের ডেড সেলস ও ময়লা দূর করে ত্বককে গ্লোয়িং করে।
যারা নিয়মিত প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে ত্বকের যত্ন নিতে পছন্দ করেন তারা নিয়মিত ব্যবহারের জন্য এখান থেকে আপনার পছন্দ ও প্রয়োজন অনুযায়ী আলুর একটি ফেসপ্যাক সিলেক্ট করে ব্যবহার শুরু করুন।