ত্বকের যত্ন

ত্বক উজ্জ্বল করার ১১টি দুর্দান্ত উপায়।

Brighten Skin

সুন্দর ও ফেয়ার স্কিন পেতে, নিতে হবে ত্বকের সঠিক যত্ন। রেগুলার নিয়ম করে একটি নির্দিষ্ট স্কিনকেয়ার রুটিন মেনে চললে ত্বকের উজ্জ্বলতা কিন্তু দ্বিগুণ বেড়ে যায়। অনেকেই ভাবেন,সুন্দর ত্বক একমাত্র জেনেটিক্স এর কারনেই পাওয়া সম্ভব।

কিন্তু আপনি কি জানেন সঠিকভাবে স্কিন কেয়ার রুটিন ফলো করার পাশাপাশি স্কিনের জন্য সঠিক প্রোডাক্ট সিলেকশনে আপনি পাবেন,পারফেক্ট উজ্জ্বল ত্বক।এছাড়াও রেগুলার বেসিক স্কিন কেয়ার রুটিন ফলো করে চললে অকাল বার্ধক্য এবং অন্যান্য ত্বকের সমস্যাও প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়।আয়নায় নিজের ব্রাইট, গ্লোয়িং স্কিন দেখতে কে না চাই বলুনতো। কিন্তু অনেকেই রেগুলার স্কিন কেয়ার রুটিন স্টেপ বাই স্টেপ কেমন হবে তা নিয়ে কনফিউসড থাকেন। তাই চলুন আজকে জেনে নেই একটি স্টেপ বাই স্টেপ ব্রাইটেনিং স্কিন কেয়ার রুটিন। এই রুটিনটা রেগুলার মেনে চললে আপনার স্কিন হবে ব্রাইট ও সুন্দর।

১. ক্লিনজার

ক্লিনজার হলো স্কিন কেয়ার রুটিনের ফার্স্ট স্টেপ।অনেকেই ভাবেন যে ফেইস ক্লিন করতে যেকোনো একটি প্রোডাক্ট ব্যবহার করলেই তো হয়! কিন্তু না, অবশ্যই স্কিন টাইপ ও কনসার্ন বুঝে সে অনুযায়ী ক্লিনজার সিলেক্ট করতে হবে। তা না হলে ত্বকের অন্যান্য সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। আমাদের এমন একটি ক্লিনজার সিলেক্ট করতে হবে যা ত্বকের গভীর থেকে অতিরিক্ত তেল, ময়লা, এবং ধুলোবালি পরিষ্কার করে ও ত্বকের ন্যাচারাল অয়েল ধ্বংস না করেই ইন্সট্যান্ট গ্লোয়িং স্কিন দিবে।

তাই নিজের ত্বকের ধরন অনুযায়ী সঠিক ক্লিনজার বেছে নিতে হবে। এই সকল কাজের জন্য নিঃসন্দেহে বেস্ট ক্লিনজার হচ্ছে – Boots Vitamin C Brightening Cleansing Gel ।এই ক্লিনজারে রয়েছে ভিটামিন সি ও yuzu এক্সট্রাক্ট যা নিয়মিত ১৪ দিন ব্যবহারে স্কিনকে সফট ও ব্রাইট করবে । এটি অ্যালকোহল ও প্যারাবেন ফ্রি তাই সব ধরনের স্কিনে ব্যবহার করা যায়।

২. টোনার

স্কিন কেয়ারে যে স্টেপটি নিয়ে আমরা অনেকেই অবহেলা করি বা না বুঝে ইগনোর করি, সেটা হচ্ছে টোনিং করা।তবে এই টোনার অ্যাপ্লাই মিস করলে কিন্তু আপনার স্কিন কেয়ার রুটিনটা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। টোনার স্কিনে অনেক বেনিফিট দেয় যা আমরা অনেকেই জানিনা,টোনার স্কিনের পি এইচ ব্যালেন্স ঠিক রাখে,ত্বককে জেন্টলি এক্সফোলিয়েট করে এতে স্কিন ফ্রেশ ও ক্লিন দেখায়,পোরস মিনিমাইজ করতে হেল্প করে ও ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে বাঁধা দেয়।

এছাড়াও টোনার স্কিনকে পরবর্তী স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টের জন্য তৈরি করে যাতে সেটা ভালোভাবে ত্বকে শোষিত হতে পারে। তাই ত্বক ক্লিনজার দিয়ে পরিষ্কার করার পর এই টোনারটি ব্যবহার করবেন – COSRX AHA BHA Clarifying Treatment Toner । এতে রয়েছে আলফা হাইড্রোক্সিড ও বিটা হাইড্রোক্সি যা স্কিনকে এক্সফোলিয়েট করে ,ত্বককে আরো মসৃন ও ব্রাইটেনিং করে। এটি সব ধরনের ত্বকের জন্যই সুইটেবল।

৩. এসেন্স

টোনার ব্যবহার করার পরই এসেন্স ব্যবহার করা উচিত। কারণ এসেন্স স্কিনকে রিজেনারেট করতে সাহায্য করে। এটি ত্বকের রিঙ্কেলস, বলিরেখা, অনুজ্জ্বল ভাব দূর করে ত্বককে ভেতর থেকে উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত করে তোলে। এসেন্স খুবই লাইট ওয়েটের তাই খুব দ্রুত এটি ত্বকে শোষিত হয়ে যায়। পানিই এর প্রধান উপাদান। এতে আরো অন্যান্য সক্রিয় উপাদানও থাকে যেমন – উদ্ভিজ্জ নির্যাস এবং এইচসিএএস (হেটেরোসাইক্লিক অ্যামাইন) যা ত্বককে উজ্জ্বল করতে এবং আর্দ্রতা ধরে রাখতে সহায়তা করে।নিয়মিত এসেন্স ব্যবহারে স্কিনের ব্যারিয়ার ভালো থাকে এবং বয়সের ছাপও তুলনামূলকভাবে কম পরে। তাই টোনার ব্যবহারের পর হাতে অল্প পরিমাণ এসেন্স নিয়ে পুরো ফেসে আলতো ভাবে এপ্লাই করে নিবেন। COSRX Galactomyces 95 Tone Balancing Essence – এই এসেন্সটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে খুব ভালো কাজ করে।

৪. সিরাম

Glycolic acid serum

সিরামে হাইলি কনসেনট্রেটেড ও পাওয়ারফুল ইনগ্রেডিয়েন্ট রয়েছে ।এটি লাইট ও থিন ফর্মুলায় তৈরি যা স্কিনের ডিপ লেয়ারে প্রবেশ করতে পারে। সিরাম স্পেসিফিক স্কিন কনসার্নকে টার্গেট করে কাজ করে ও দ্রুত সমাধান দেয়।সিরাম ত্বকের বলিরেখা, দাগ, স্কিন টোন ও টেক্সচার এর মত সমস্যার সমাধান করে। তাই রেগুলার স্কিন কেয়ারে এসেন্স ব্যবহারের কিছুক্ষণ পর ত্বক যখন শুকিয়ে যাবে তখন, হাতের তালুতে কিংবা কটন প্যাডের সাহায্যে ফুল ফেইসে সিরাম এপ্লাই করুন। The Body Shop Drops Of Light Pure Healthy Brightening Serum সিরামটি রেগুলার ব্যবহারে স্কিনের যেকোনো প্রকারের দাগ ও পিগমেন্টেশন রিমুভ হবে ও স্কিন হবে হেলদি ও ব্রাইট। রেগুলার স্কিন কেয়ারে- স্কিনকে ব্রাইট ও গ্লোয়িং রাখতে এই সিরামটি ব্যবহার করবেন।

৫. মশ্চারাইজার

ময়েশ্চারাইজার মূলত ত্বকের উপরে একটি হাল্কা ও অদৃশ্য লেয়ার তৈরি করে যা ত্বকের ওয়াটার মলিকিউলস কে ত্বক থেকে বাইরে চলে যাওয়ার পথে বাধা প্রদান করে ও স্কিনকে হাইড্রেটেড রাখে। তাই স্কিন কেয়ার রুটিনে সিরাম এপ্লাইয়ের পর ত্বকের ময়েশ্চার লক করতে মশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হয়। তাই সিরাম ব্যবহারের পর দিনের বেলায় The Body Shop Drops Of Light Brightening Day Cream ব্যবহার করুন । নিয়মিত এই ক্রিম ব্যবহারে ত্বকের অবাঞ্ছিত দাগ, পিগমেন্টেশন রিমুভ হবে এবং স্কিন হেলদি ও ব্রাইট হবে।

৬. সানস্ক্রিন

সূর্যের ক্ষতিকারক আলট্রাভায়োলেট রশ্মি আমাদের ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে। এই আলট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকে নিজের ত্বককে সুরক্ষা দিতে দিনের বেলায় আমরা সানস্ক্রিন ব্যবহার করি। সানস্ক্রিন ব্যবহার না করলে সূর্যের প্রভাবে ত্বকে -র‍্যাশ, রেডনেস, ইরিটেশন ও স্কিন টোনের তারতম্য, মেলাজমা বা মেসতা ও স্কিন ক্যান্সারের মত বড় সমস্যা হয়। তাই শুধু বাইরে বের হলেই যে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে তা কিন্তু নয়, ঘরে বসে থাকলেও এটি ব্যবহার করতে হবে। তাই স্কিনে ময়শ্চারাইজার অ্যাপ্লাইয়ের পর Missha All Around Safe Block Sun Milk Essence Sunscreen SPF50+ ব্যবহার করুন। এটি স্কিনকে সূর্যের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে ও এর পদ্মফুল ও অ্যালোভেরার নির্জাস আপনাকে দিবে একটি সুন্দর অনুভূতি। এছাড়াও এটি সব ধরনের স্কিনে সুইটেবল।

৭. মাইসেলার ওয়াটার

ত্বকে জমে থাকা সেবাম, মেকআপ প্রোডাক্টস ও অন্যান্য ডার্ট ক্লিন করতে ব্যবহার করা হয় মাইসেলার ওয়াটার । যারা অলওয়েজ মেকআপ ব্যবহার করেন তাদের কাছে এটি খুবই পরিচিত ও জনপ্রিয়। মাইসেলার ওয়াটারের সাহায্যে ফেইস থেকে খুব ইজিলি মেকআপ রিমুভ করা যায়। এটি ব্যবহার করার ফলে ত্বক ফ্রেশ, সফট ও স্মুথ হয়।এটি স্কিনে প্রয়োজনীয় হাইড্রেশন প্রোভাইড করে এবং ইরিটেশন প্রিভেন্ট করে। মাইসেলার ওয়াটারে মূলত পিওর ওয়াটার ও মাইল্ড সারফেক্ট্যান্ট থাকে।যা সেনসিটিভ ও একনে প্রন স্কিনেও ব্যবহার করা যায়। এগুলো No-rinse ফর্মুলায় তৈরি।

স্কিনে মেকাপ করলে বা বাইরে থেকে এসে স্কিনের ময়লা রিমুভ করতে এবং সানস্ক্রিন রিঅ্যাপ্লাই এর আগে একটি কটন প্যাডে পরিমাণমতো মাইসেলার ওয়াটার নিয়ে ফেইসে চেপে চেপে মুছে নিবেন। Simple Kind To Skin Micellar Cleansing Water ব্যবহার করবেন। এটি সব ধরনের ত্বকে সুইটেবল । অনেক কারণেই বারে বারে ক্লিনজার দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করা যায় না সেক্ষেত্রে ক্লিনজারের পরিবর্তে মাইসেলার ওয়াটার দিয়ে ত্বক ক্লিন করতে পারেন ।

৮. এক্সফোলিয়েশন

ত্বকে জমে থাকা ডেড সেলস আর ব্ল্যাকহেডস ক্লিন করতে সপ্তাহে ১/২ দিন কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর (AHA/BHA অ্যাসিড) বা ফিজিক্যাল এক্সফোলিয়েটর স্ক্রাব ব্যবহার করুন। উজ্জ্বল এবং সুন্দর ত্বকের জন্য এক্সফোলিয়েশন স্কিনকেয়ারের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। St. Ives Radiant Skin Pink Lemon & Mandarin Orange Scrub একটি ফিজিক্যাল এক্সফোলিয়েটর। এতে রয়েছে পিঙ্ক লেমন এবং মান্দারিন অরেঞ্জ এক্সট্র্যাক্ট যা স্কিনকে সতেজ ও গ্লোয়িং করতে দারুণ কাজ করে। এছাড়াও Cerave Blemish Control Gel with AHA & BHA ব্যবহার করতে পারেন এটি একটি কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর । সপ্তাহে ১/২ দিন ব্যবহার করলে মসৃণ ,সতেজ ও গ্লোয়িং স্কিন পাবেন।

৯. আই ক্রিম

আই এরিয়া ফেইসের একটি অংশ। আই এরিয়ার যত্ন না নিলে চোখের নিচে ভিজিবল হবে রিংকেল, ফাইন লাইন, পাফিনেস ও‌ ডার্ক সার্কেল। ফেইসে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের পাশাপাশি আই ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। কারণ মশ্চারাইজার ও আই ক্রিম এর কাজ এক নয়। তবে আই ক্রিম ও এক ধরনের ময়েশ্চারাইজার, যা বানানো হয়েছে স্পেসিফিক আই এরিয়ার জন্য। চোখের চারপাশের এরিয়াকে বলা হয় পেরিঅরবিটাল এরিয়া। এই এরিয়াটুকু ফেইসের অন্যান্য অংশের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি সেনসিটিভ হয়ে থাকে।

তাই এর দরকার বিশেষ যত্ন। আর এই যত্ন নিতে,ব্যবহার করতে হবে-Cerave Skin Renewing Eye Cream। Skin Renewing Eye Cream। Skin Renewing Eye Cream।এটি খুবই কার্যকর একটি আই‌ ক্রিম। এতে রয়েছে তিনটি এসেন্সিয়াল সেরামাইডস, ইনক্যাপসুলেটেড রেটিনল ও হায়ালুরনিক অ্যাসিড যা ত্বকের ফাইন লাইনস, পাফিনেস ও ডার্ক সার্কেল রিমুভ করে, স্কিনকে হেলদি ও ব্রাইটেনিং করে।

১০. রেটিনল

রেটিনল ভিটামিন এ এর একটি ফর্মের সবচেয়ে লো কনসেনট্রেশন । রেটিনল ত্বকে কোলাজেন ও ইলাস্টিন প্রোডাকশন বৃদ্ধি করে স্কিন টেক্সচারকে ইম্প্রুভ করে, এজিং সাইনস প্রিভেন্ট ও একনে সল্যুশনে সাহায্য করে। বয়স ত্রিশের পর আন্টি এজিং সাইন্স প্রিভেন্ট এর জন্য The Ordinary Retinol 0.2% in Squalene দিয়ে রেটিনল ব্যবহার শুরু করতে পারেন। প্রথম উইকে একদিন অ্যাপ্লাই করুন, ধীরে ধীরে সপ্তাহে দুইদিন বা তিন দিন ব্যবহার শুরু করুন। রেটিনল নাইট স্কিন কেয়ারে ব্যবহার করুন।

১১. ফেইস মাস্ক

বেসিক স্কিন কেয়ার রুটিন ফলো করার পাশাপাশি সপ্তাহে ২ দিন ফেইস মাস্ক ব্যবহার করলে ত্বক হেলদি থাকে ও উজ্জ্বল হয়। বাড়িতে বসেই সপ্তাহে দুই দিন অথবা এক দিন Skin Cafe Detox Healing Clay Mask ব্যবহার করুন। এটি ত্বকের পোরসে জমে থাকা ময়লা রিমুভ করে ও পোরস মিনিমাইজ করে । ত্বকের অতিরিক্ত সেবাম উৎপাদন কন্ট্রোল করে ও ব্ল্যাকহেডস রিমুভ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও যাদের একনে প্রবলেম আছে তারা Skin Cafe Acne Care Mask‌ ব্যবহার করুন। এটি ত্বকের একনে রিমুভ করতে সাহায্য করে ও ইভেন টোন গ্লোয়িং স্কিন প্রডিউস করে।

সুন্দর ও ফেয়ার স্কিন পেতে বেসিক স্কিন কেয়ার এর সাথে যোগ করতে হবে মাইসেলার ওয়াটার, এক্সফোলিয়েশন, আই ক্রিম ,রেটিনল ও ফেইস মাস্ক। এভাবে রেগুলার স্কিনের যত্ন নিলে স্কিন হবে সুন্দর ও ফেয়ার। তবে স্কিন কেয়ারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে অথেনটিক স্কিন কেয়ার প্রডাক্ট পারচেজ করা।

কারণ ভুল প্রোডাক্ট ব্যবহারে স্কিনের অনেক ক্ষতি হয় তাই দেশি-বিদেশি সকল ব্র্যান্ডের অরিজিনাল প্রোডাক্ট পেতে ভিজিট করুন Hretus World, House – 74, Road – 5/A (New), Shat Masjid Road, Dhanmondi, Dhaka – 1209 ঠিকানায় অথবা আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি ক্যাশ অন ডেলিভারিতে পারচেজ করূন Hretus World এর অ্যাপ বা ওয়েবসাইট থেকে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *