ফেস মাস্ক ব্যবহারের নিয়ম?
ত্বকের যত্নে নানা ধরনের স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট আমরা নিয়মিত ব্যবহার করে থাকি। ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখা, ত্বকে অতিরিক্ত সেবাম উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করা, স্কিনের গ্লো বাড়াতে, ত্বকের লোম ছিদ্র পরিষ্কার রাখা, ব্রণ আটকানো এবং ত্বক হাইড্রেট রাখতে ফেইস মাস্ক ব্যবহারে অনেক বেনিফিট পাওয়া যায়।
ত্বকের ধরন অনুযায়ী ফেইস মাস্ক ব্যবহার:
স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই ত্বকের ধরন অনুযায়ী স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট বেছে নেওয়া উচিত। বাজারে নানা ধরনের ফেস মাস্ক পাওয়া যায়।
তবে অনেকেই বুঝে উঠতে পারেন না কোন ফেইস মাস্ক আপনার ত্বকের জন্য উপযোগী। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক ,আপনার ত্বকের ধরণ অনুযায়ী কোন ফেইস মাস্ক ব্যবহার করবেন।
শুষ্ক বা ড্রাই ত্বকের ক্ষেত্রে :
যাদের ত্বক শুষ্ক এবং ড্রাই তাদের ক্ষেত্রে ত্বকে স্লিপ মাস্ক ব্যবহার করলে ভালো বেনিফিট পাওয়া যায়। এই মাস্ক ত্বকে ওভার নাইট ব্যবহার করলে ত্বকের আদ্রতা ফিরে আসে।
সান ড্যামেজ স্কিন অর্থাৎ রোদে পোড়া ত্বকের ক্ষেত্রে:
যাদের ত্বক রোদে পুড়ে কালো হয়ে গেছে সেক্ষেত্রে আমরা ত্বকে বাবল মাস্ক ব্যবহার করতে পারি। এই মাস্ক অন্যান্য সাধারণ মাস্কের মতোই দেখতে ,তবে এটা ত্বকে লাগাতেই ফুলে ফুলে উঠে সাবানের ফ্যানার মতো। এই মাস্ক ত্বকের লোমকূপের ময়লা পরিষ্কার করে , ত্বকে পুষ্টির যোগান দেয় এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।
তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে:
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য পিল অফ মাস্ক এবং চারকোল মাস্ক খুবই কার্যকরী। পিল অফ মাস্ক এবং চারকোল মাস্কের স্ট্রাকচার জেলের মতো।
এই মাস্ক ব্যবহারে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় এবং ত্বক পরিষ্কার হয়।
কম্বিনেশন স্কিন টাইপ অর্থাৎ সব ধরনের ত্বকের ক্ষেত্রে:
শিট মাস্ক অনেক কার্যকরী একটি ফেইস মাস্ক। এটি প্রায় সব ধরনের ত্বকেই ব্যবহার করা যায়। এ মাস্ক এর স্ট্রাকচার অনেকটা পাতলা কাপড়ের মত। এই মাস্কে সিরাম,আরো অন্যান্য এসেন্সিয়াল প্রডাক্ট মেশানো থাকে। শিট মাস্ক ব্যবহারে ত্বকে দ্রুত জেল্লা বৃদ্ধি পায়। ইনস্ট্যান্ট জেল্লা পেতে শিট মাস্কের জুড়ি নেই।
ত্বকের রুক্ষতা, আদ্রতা, নির্জীবতা, তৈলাক্ততা কমাতে, আমরা সপ্তাহে দুই বার অথবা ত্বকের প্রয়োজন অনুযায়ী ডেইলি ফেইস মাস্ক ব্যবহার করি। তবে ভুল নিয়মে ফেইস মাস্ক ব্যবহার করলে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে।
ত্বকে ফেইস মাস্ক ব্যবহারের আগে এবং পরে কি করবেন?
চলুন জেনে নেওয়া যাক,ত্বকে ফেইস মাস্ক ব্যবহারের ধাপ সমূহ:
ত্বক পরিষ্কার করা
ফেইস মাস্ক ব্যবহারের পূর্বে ত্বক ভালো ক্লিনজার বা ফেইসওয়াশ দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিব।
ত্বকে টোনার লাগানো
আমরা অনেকেই ত্বকে ফেইস মাস্ক ব্যবহারের আগে কিছু লাগানোর প্রয়োজন বোধ করি না । ফলে ত্বকে কার্যকর কোন বেনিফিট পাওয়া যায় না।
তাই ফেইস মাস্ক ব্যবহারের আগে অবশ্যই ত্বকে টোনার ব্যবহার করব।
ফেইস মাস্ক লাগানো
স্কিন টাইপ অনুযায়ী কেমন ফেইস মাস্ক ব্যবহার করবেন তা আমরা ইতিমধ্যে আলোচনা করেছি। আপনার স্কিন টাইপ অনুযায়ী ফেইস মাস্ক পরিষ্কার ত্বকে লাগিয়ে নিন। অবশ্যই চোখের এরিয়াতে সতর্কতার সাথে এরিয়ে ভালোভাবে ত্বকে লাগিয়ে নিবেন।
পর্যাপ্ত সময় পর্যন্ত ত্বকে ফেইস মাস্ক রাখা
ফেইস মাস্কে অনেক ধরনের উপাদান থাকে যা ত্বকে বেশিক্ষণ রাখলে ত্বকের ক্ষতি হয়। ত্বকে বেশিক্ষণ ফেইস মাস্ক রাখলে ত্বকে লালচে ভাব, রেশ উঠা ইত্যাদি সমস্যা হয়। তাই ত্বকে ১৫ মিনিটের অধিক সময় ফেইস মাস্ক রাখা যাবে না।
ফেইস মাস্ক উঠানোর নিয়ম
ফেইস মাস্ক ব্যবহারের পর হাতের আঙ্গুলের সাহায্যে সাধারণ তাপমাত্রার পানি অথবা হালকা গরম পানি দিয়ে আলতো ভাবে উঠিয়ে নিন।
পিল অফ মাস্ক এবং শিট মাস্ক তোলার ক্ষেত্রে হাতের আঙ্গুলের সাহায্যে আলতো ভাবে ত্বক থেকে মাস্ক তুলে নিন।
ত্বকে মশ্চারাইজার লাগানো
ফেইস মাস্কে অনেক শুষ্ক উপাদান থাকে। তাই ফেইস মাস্ক ব্যবহারের পর ত্বকে মশ্চারাইজার ব্যবহার করলে ত্বক শুষ্ক হয়না। তাই ফেইস মাস্ক ব্যবহারের পর অবশ্যই ত্বকে মশ্চারাইজার লাগাবেন।
আরো জানুন, চুলের যত্নে অ্যালোভেরা জেলের উপকারিতা।