টি ট্রি অয়েল এ রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল গুন। অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীরা চা গাছের তেলকে ঐতিহ্যগতভাবে ভেষজ ঔষধ , জীবাণু ঘাতক (অ্যান্টিসেপটিক) হিসেবে ব্যবহার করে।
টি ট্রি ওয়েল বর্তমানে বাহ্যিকভাবে ত্বক এবং চুলের বিভিন্ন যত্নে ব্যবহার করা হয়। ত্বক এবং চুলের যত্নে টি ট্রি ওয়েল এসেনশিয়াল খুবই উপকারী।
টি ট্রি অয়েল বহু গুণে গুণান্বিত ভেষজ তেল। ত্বকের যত্নে বর্তমানে টি ট্রি অয়েল এসেনশিয়াল এর ব্যবহার ব্যাপক। টি ট্রি অয়েল ব্যবহার করা হয় – ব্রণ , উকুন নাশক হিসেবে, নখের যত্নে, চোখের পাতার গোড়ায় মাইটসের আক্রমণ সারাতে, পোকামাকড়ের কামড়ের বিষক্রিয়া কমাতে ব্যবহৃত হয়।
ত্বকের যত্নে টি ট্রি অয়েলের ব্যবহার-
টি ট্রি অয়েলে রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক গুন, ফলে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান হয় টি ট্রি অয়েল এসেনশিয়াল ব্যবহারে।
তাহলে জেনে নেওয়া যাক টি ট্রি অয়েল ত্বকের যত্নে কিভাবে কাজ করে।
ত্বকের ড্রাইনেস দূর করে:
টি ট্রি অয়েল ত্বককে হাইড্রেটেট রাখে ফলে প্রশান্তি অনুভব হয় এবং ত্বকের ড্রাইনেস দূর হয়। রোজ সকালে অথবা ঘুমানোর আগে দুই ফোটা টি ট্রি অয়েলের সাথে এক চামচ মধু মিক্স করে ত্বকে লাগিয়ে নিবেন।
কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন। ফলে আপনার ত্বকের ড্রাইনেসের সমস্যা সমাধান হবে।
ত্বকে ব্রণ ওঠা অর্থাৎ একনি প্রবলেম দূর করে:
টি ট্রি অয়েলে রয়েছে আন্টি ইনফ্লেমেটরি এবং এন্টি ব্যাকটেরিয়াল গুণ। যারা বছরের প্রায় সময়ই একনি অর্থাৎ ব্রনের প্রবলেম এ ভুগেন তারা নিয়মিত টি ট্রি অয়েল ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাবেন।
টি ট্রি অয়েলে থাকা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল গুণাবলীর কারণে ত্বকের ব্রণ ,একনি ,লাল ভাব দূর হয় এবং ত্বক মসৃণ ও হেলদি হয়।
ত্বককে টোন আপ করে অর্থাৎ স্কিন গ্লোয়িং করে:
নিয়মিত টি ট্রি অয়েল অ্যাসেনসিয়াল ব্যবহারে ত্বক ভেতর থেকে পরিষ্কার হয় এবং স্কিন বাহির থেকে আরও গ্লোয়িং দেখায়। এখন আর ফিল্টার ব্যবহার করে গ্লোয়িং স্কিন না খুঁজে নিয়মিত টি ট্রি অয়েল ব্যবহার করলে আপনার স্কিন এমনিতেই অনেক গ্লোয়িং হবে।
ত্বকের অয়েলি ভাব কমায়:
টি ট্রি অয়েলে রয়েছে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্য। যা ত্বকের তৈলাক্ততা কমাতে সাহায্য করে এবং ত্বকে অয়েলি ভাব হতে দেয় না ত্বক হাইড্রেটেট রাখে।
ব্রণের প্রদাহ অর্থাৎ ত্বকের ইরিটেশন কমায়:
টি ট্রি অয়েলের অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্যের কারণে ত্বকের বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ, এলার্জিজনিত জ্বালাপোড়া, লাল-ভাব, ফোলা ভাব কমায়।
এক্ষেত্রে নারিকেল তেল অথবা অলিভ অয়েলের সাথে ২-৩ ফোটা টি ট্রি অয়েল মিক্স করে সংক্রমিত জায়গায় মেসেজ করুন। এতে প্রদাহ প্রশমিত হবে।
ব্রণ দূর করতে টি ট্রি অয়েলের ফেসপ্যাক-
ব্রণ বছরে কম বেশি সব সময় ই হয়। তবে গরমের দিনে ব্রনের সমস্যা বেশি হয়। যারা কম বেশি ব্রণের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য টি ট্রি অয়েলের ব্যবহার আবশ্যিক। এক্ষেত্রে টি ট্রি অয়েলের ফেসপ্যাক বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
মুলতানি মাটি ,গোলাপ জল, নিম পাতা বাটার সাথে ২-৩ ফোটা টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করুন। এই ফেসপ্যাকটি সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করলে ব্রণের সমস্যা দূর হবে।
ত্বকের ড্রাইনেস দূর করতে টি ট্রি অয়েলের টোনার-
ত্বক পরিষ্কার এবং হাইড্রেটেট থাকলে ত্বক বাহির থেকে হেলদি দেখায়। এক্ষেত্রে টি ট্রি অয়েলের টোনার ব্যবহার করতে পারেন।
এক কাপ গরম পানিতে গ্রিন টি এর প্যাকেট ডুবিয়ে রাখুন ৪-৫ মিনিট তারপর ওই পানিতে ২-৩ ফোটা টি ট্রি অয়েল মিক্স করে একটি স্প্রে বোতলে ভরে টোনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
ফলে ঝটপট টোনার ব্যবহার করে আপনার ত্বক হাইড্রেটেট হবে এবং সতেজতা অনুভব করবেন।
চুলের যত্নে টি ট্রি অয়েল
টি ট্রি ওয়েলে আছে ভিটামিন ,মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফর্মুলা। যা আপনার স্কেল্পের ভিতরে জমে থাকা ময়লা দূর করে।
প্রতিদিন মাথায় টি ট্রি অয়েল মালিশ করলে মাথায় রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। চুলের ডগা ফেটে যাওয়া ,চুল রুক্ষ হওয়া, মাথায় চুলকানি ও রেশ হলে প্রতিদিন টি ট্রি অয়েল মালিশ করলে চুলের সমস্যা সমাধান হয়।
চুলে টি ট্রি অয়েল কিভাবে ব্যবহার করবেন-
নারিকেল তেল, অলিভ অয়েল অথবা আপনি রেগুলার যে তেল গুলো ব্যবহার করেন সেই তেলের সাথে টি ট্রি অয়েল মিক্স করে চুলে ব্যবহার করবেন।
টি ট্রি অয়েল ব্যবহারে সতর্কতা-
টি ট্রি অয়েল ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করতেই হবে, কারণ এটি এসেনসিয়াল অয়েল। টি ট্রি অয়েল যেন কোন ভাবেই চোখে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। ত্বক বা চুলে সরাসরি টি ট্রি অয়েল ব্যবহার করবেন না।
অন্যান্য প্রসাধনীর সাথে টি ট্রি অয়েল মিক্স করে ব্যবহার করবেন ত্বক এবং চুলে। সরাসরি ব্যবহার করলে ফল হিতে বিপরীত হবে।