চোখের সুরক্ষা ও সুস্থতা বজায় রাখতে ২০টি প্রয়োজনীয় টিপস।
নিয়মিত চোখের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু অভ্যাস গড়ে তুললে,চোখের সমস্যা সহজেই এড়ানো যায়। বর্তমান সময়ে যত দিন যাচ্ছে ততই বাড়ছে স্মার্টফোন, ট্যাব ও কম্পিউটারের ওপর নির্ভরতা। সেই সঙ্গে বাড়ছে চোখের ওপর চাপ। শরীর ভালো রাখার জন্য যেমন আমরা হাঁটাহাঁটি ও শরীরচর্চা করি ঠিক তেমনই চোখ ভালো রাখতেও চোখের ব্যায়াম প্রয়োজন।চোখের যত্ন কিভাবে নিতে হয় এই বিষয়ে অনেকেই জানে না। তাই আজকে আমরা এখানে জানবো, চোখের যত্নের কিছু সহজ ও ব্যবহারিক পদ্ধতি সম্পর্কে।
১. শাক সবজি
শাক সবজিতের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, বিটা ক্যারোটিন, লুটেইন এবং জিয়াক্সানথিন যা সূর্যের ক্ষতিকর অতি বেগুনী রশ্মি থেকে আমাদের চোখকে সুরক্ষিত রাখে।
২. গাজর
বিটা ক্যারোটিন এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্টে ভরপুর গাজর চোখের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি চোখের ম্যাকুলার কমে যাওয়া এবং ছানি পড়া প্রতিরোধ করে। গাজর খেলে চোখে কম দেখা সংক্রান্ত জটিলতা দূর হয়।এই সবজিটি সালাদ হিসেবে বা বিভিন্ন সবজির সাথে রান্না করে খেতে পারেন। তবে কাঁচা খেলে বেশি উপকার পাওয়া যাবে।
৩. ডিম
ডিমের কুসুমে প্রচুর পরিমাণে লুটেইন জিয়াক্সানথিন এবং জিংক রয়েছে যা চোখের ম্যাকুলারের বিস্তার রোধে সাহায্য করে থাকে। তাই রেগুলার খাবার ডায়েটে অন্তত একটি করে ডিম খেতে পারেন।
৪. কাজুবাদাম
গবেষকদের মতে কাজুবাদামে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই রয়েছে ।যা চোখের ম্যাকুলার বিস্তারে পতন অনেকটা কমিয়ে ফেলে।
৫. মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলুতে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন রয়েছে যা চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়। এছাড়াও এটি রাতের আলোতে চোখের দৃষ্টি ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
মোট কথা, ভিটামিন এ , ভিটামিন সি,এবং ভিটামিন এ ও ভিটামিন ডি এর মতো উপাদান রয়েছে এমন সবজি রেগুলার খাবার ডায়েটে রাখার চেষ্টা করুন।
৬. মাছ
রেগুলার খাবার ডায়েটে মাছ রাখুন। বড় মাছের পাশাপাশি ছোট মাছ খাওয়ার অভ্যাস গড়ুন। মাছে প্রচুর ওমেগা-৩ রয়েছে যা চোখের দৃষ্টিশক্তি প্রখর করে।
৭. চোখ বিশেষজ্ঞ
আপনার চোখের সমস্যা যদি নিয়মিত হয় তাহলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের কাছে চোখ দেখান। কারণ চোখের কার্যকরী যত্নের অন্যতম সেরা হাতিয়ার হল নিয়মিত চক্ষু পরীক্ষা করা।
৮. চোখ মিট মিট করা
ঘন ঘন চোখ মিট মিট করা চোখের স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো।প্রতি তিন থেকে চার সেকেন্ড অন্তর একবার চোখের পাতা বন্ধ ও খোলার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
৯. চোখে হালকা তাপ
দুই হাতের তালু ঘষে তাপ উৎপন্ন করে দুই চোখে ধরুন এতে চোখে আরাম বোধ হবে ও চোখের জ্বলা কমে যাবে ।
১০. পানির ঝাপটা
অনেকেই চোখে ঝাপসা দেখে , এক্ষেত্রে চোখে পানির ঝাপটা দিলে চোখের ঝাপসা ভাব কেটে যাবে ও চোখ পরিষ্কার হবে।
১১. চোখের প্রটেকশনে গগলস
পানি , প্রতিকূল আবহাওয়া ও ধুলোবালি থেকে চোখকে নিরাপদ রাখতে গগলস ব্যবহার করুন।
১২. ব্লু -রে সময় কমান
কম্পিউটার,ট্যাব, ল্যাপটপ ও টেলিভিশনের পর্দায় ক্ষতিকর ব্লু-রে থাকে যা চোখের অনেক ক্ষতি করে। তাই এগুলো ব্যবহারের সময় ব্লু-রে এর উজ্জ্বলতা কমিয়ে ব্যবহার করুন।
১৩. ধূমপান
ধূমপান শরীর ও চোখ উভয়ের ক্ষেত্রেই ক্ষতিকর। তাই ধূমপান সেবন ত্যাগ করুন।
১৪. আই মেকআপ
যারা চোখের সমস্যায় ভুগছেন তারা অবশ্যই চোখে মেকআপ প্রোডাক্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। তবে যদি মেকআপ নিয়েই থাকেন তবে যত দ্রুত সম্ভব ধুয়ে ফেলুন।
১৫. পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো
ঘুমের অভাবে মাথা ও চোখে ব্যথা অনুভব হয়। ঘুমালেই চোখ শান্তি পাবে। রেগুলার পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
১৬. দৃষ্টি দূরে ফোকাস
একটানা কাজ করার ফলে চোখে ক্লান্তি অনুভূত হয় ও চোখ ব্যথা করে । তাই কাজের ফাঁকে ১-২ মিনিট বিরতি নিয়ে দূরে কোথাও ফোকাস করূন।এটা বেশ ভালো ব্যায়াম। দূরে ও কাছে এভাবে ১০ সেকেন্ড করে বিরতি নিয়ে ফোকাস করতে হবে।
১৭. (২০-২০-২০) রুলস
এই নিয়মটি চোখের ব্যায়ামের মধ্যে অন্যতম একটি ব্যায়াম।এর মাধ্যমে চোখের ওপর পরা অতিরিক্ত চাপ প্রতিরোধ করা যায়। এক্ষেত্রে প্রতি ২০ মিনিট পরপর ২০ সেকেন্ডের জন্য ২০ ফুট দূরে একটি বস্তুর দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে হয়।
১৮. চোখ রোল আপ করা
এই ব্যায়াম করার ফলে- স্ট্রেইন বা প্রসারণ কমে ।এটা করার নিয়ম হলো প্রথমে মাথা স্থির রেখে ডানে ও বাঁয়ে কয়েকবার তাকাতে হবে, এরপর কয়েকবার ওপরে ও নিচে তাকাতে হবে।
১৯. চোখ ঘষবেন না
আমাদের হাতে – বিভিন্ন প্রকারের ময়লা, ব্যাকটেরিয়া এবং ধূলিকণা বহন করে । তাই যখনই আপনার হাত দিয়ে চোখ স্পর্শ বা ঘষেন তখন এগুলি আপনার চোখে পৌঁছাতে পারে। চোখে সংক্রমণ এবং জ্বালা রোধ করতে হাত দিয়ে চোখ স্পর্শ করা অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে।
২০. রক্তে শর্করা ও রক্তচাপ পরীক্ষা করা
এই রোগগুলি -(ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ) চোখে গুরুতর সমস্যা তৈরি করতে পারে।এই রোগ যদি সঠিক সময়ে সনাক্ত না করা হয় এবং যথাযথ চিকিৎসা না করা হয় তবে এই রোগগুলি চোখের গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।